Homeক্রিকেটশিক্ষার্থীদের সঙ্গে আলোচনা করতে চেয়েছিলেন মাশরাফি

শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আলোচনা করতে চেয়েছিলেন মাশরাফি

২২ গজের নায়ক থেকে মহানায়ক হিসেবে মানুষের মনে জায়গা করে নিয়েছিলেন মাশরাফি বিন মর্তুজা। ক্রিকেটের মাঠ থেকে রাজনীতির মাঠে প্রবেশ করেও সাফল্য পেয়েছিলেন। কিন্তু এখন সেই ভালোবাসার মানুষদের কাছেই মাশরাফি খলনায়কের অভিধা পেয়েছেন। নিজেকে ব্যর্থ হিসেবে দেখছেন নড়াইল-২ আসনের সাবেক এই সংসদ সদস্য।

গতকাল এক গণমাধ্যমের সাক্ষাৎকারে নিজের অবস্থার কথা তুলে ধরেছেন বাংলাদেশের এই ক্রিকেটার। শিক্ষার্থীদের যৌক্তিক আন্দোলন নিয়ে কিছু করতেও চেয়েছিলেন, কিন্তু বিভিন্ন প্রতিবন্ধকতার কারণে সেটি পারেননি বলে দাবি করেছেন তিনি। মাশরাফি বাংলাদেশ জাতীয় দলের সাবেক অধিনায়ক ছিলেন। দল হারলে সেই দায় নিজের কাঁধে তুলে নিতেন। কিন্তু আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে যুক্ত হওয়ার পরে সেটি ভিন্ন প্রেক্ষাপট বলে উল্লেখ করেছেন তিনি। ক্রিকেট দলের দায় নিজে তুলে নিলেও রাজনৈতিক দলের দায় তিনি নিজের কাঁধে তুলে নিতে পারেন না বলে জানিয়েছেন। শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের সময়ে তার ভক্তরা চেয়েছিলেন, মাশরাফি যেন তাদের পাশে এসে দাঁড়ান। কথা বলেন। কিন্তু এই ক্রিকেটার সেটি করেননি।

তবে মাশরাফি নিজের জায়গা থেকে কথা বলার চেষ্টা করেছেন বারবার, সমাধানের পথ খুঁজেছেন। কিন্তু বিভিন্ন কারণে তিনি সেটি সফলভাবে করতে পারেননি বলে জানিয়েছেন। আন্দোলনকারী নিরস্ত্র শিক্ষার্থীদের ওপরে যখন নির্বিচারে গুলি চালিয়ে হত্যাযজ্ঞ চালানো হয়েছিল, তখনো মাশরাফি চুপ ছিলেন। তবে সে সময়ে তার মেয়ে হুমায়রা সরব হয়েছিলেন সামাজিক মাধ্যমে কথা বলেছেন, শিক্ষার্থীদের ন্যায্য অধিকারের পক্ষে। মাশরাফি সেটি জেনেও বাধা দেননি। তিনি চেয়েছিলেন, তার মতো তার মেয়েও যেন চুপ করে না থাকে।

মাশরাফি সে সময়ে সামাজিক মাধ্যমে কিছু কথা লিখতে চেয়েছিলেন, শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের পক্ষে কথা বলতে চেয়েছিলেন। কিন্তু তার থেকে সমাধানের বিষয়ে বেশি জোর দিয়েছিলেন। যখন দেখেছেন কিছুই করতে পারছেন না, তখন আর কথা বলারও সাহস করেননি। তিনি জানিয়েছেন, সবকিছু খুব দ্রুত হয়ে গেছে। তখন কথা বললে এখন হয়তো অনেকের কাছে ভালো থাকতেন, কিন্তু কথা যে বলতে পারেননি সেই কষ্ট আজীবন থাকবে তার। রাজনীতিতে আসার বিষয়ে মাশরাফি জানিয়েছেন, তিনি নড়াইল-২ আসনের মানুষের কথা বিবেচনা করেই এসেছিলেন। তাদের জন্য কিছু করতে চেয়েছিলেন। চেষ্টাও করেছেন। তবু সেই নড়াইলের মানুষ তার বাড়ি পুড়িয়েছে।

এই বিষয়ে কিছুটা হতাশও মাশরাফি। তার মতে, বাইরের কেউ গিয়ে তার বাড়িতে আগুন দেয়নি। নড়াইলেরই কিছু মানুষ সেটি করেছে। তবে এই বিষয়ে কোনো প্রতিকার তিনি চান না। তিনি চান না নড়াইলের কাউকে বিচারের মুখোমুখি করতে। যা হয়েছে, তা তিনি মেনে নিয়েছেন। এখন রাজনীতিতে থাকবেন কি না, সেটি নিয়েও সিদ্ধান্ত নেননি তিনি। যে রাজনীতির মাধ্যমে বড় পরিসরে কিছু করতে চেয়েছিলেন, সেই জায়গায় ব্যর্থ হয়েছেন বলে মনে করেন মাশরাফি।

Must Read