Homeজেলার খবরহাওড়া নদীর বাঁধ ভেঙে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি, প্লাবিত ৩৫ গ্রাম

হাওড়া নদীর বাঁধ ভেঙে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি, প্লাবিত ৩৫ গ্রাম

ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের উজান থেকে নেমে আসা পানিতে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়ার হাওড়া নদীর বাঁধ ভেঙে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে। বেড়েছে পানি। নতুন করে আরও বেশ কিছু গ্রাম প্লাবিত হয়েছে।

ভারীবর্ষণ ও ভারতের পাহাড়ি ঢলে ভারত সীমান্তবর্তী আখাউড়ার উপজেলার নিম্নাঞ্চলের বন্যা পরিস্থিতির উদ্ভব হয় মঙ্গলবার রাত থেকে। বুধবার সন্ধ্যা নাগাদ ৩৫টি গ্রাম প্লাবিত হয়। পানিবন্দী হয়ে পড়ে প্রায় ৬শ পরিবার। এ ছাড়াও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ধানি জমি, শাকসবজির জমিসহ বিভিন্ন মাছের ঘের।

এদিকে, বৃহস্পতিবার সকালে বন্যা দুর্গত এলাকা পরিদর্শন করেছেন জেলা প্রশাসক মো. হাবিবুর রহমান। এ সময় দুর্গতদের মাঝে শুকনো খাবার চিড়া, গুড়, ওরস্যালাই বিতরণ করা হয়। সেনাবাহিনী, পুলিশ, পানি উন্নয়ন বোর্ড ও ফায়ার সার্ভিসের কর্মকর্তারা এ সময় উপস্থিত ছিলেন।

বৃহস্পতিবার (২২ আগস্ট) সকালে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায় উপজেলার মনিয়ন্দ ইউনিয়নের ইটনা ও মোগড়া ইউনিয়নের খলাপাড়া এলাকায় হাওড়া নদীর বাঁধ বেঙে নতুন নতুন গ্রাম প্লাবিত হচ্ছে।

স্থানীয় ও প্রশাসন সূত্র জানায়, মঙ্গলবার রাত থেকে আখাউড়ায় ভারীবর্ষণ শুরু হয়। সকাল থেকে বন্দরের পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া খাল দিয়ে ভারত থেকে তীব্র বেগে পানি ঢুকতে থাকে। এক পর্যায়ে স্থলবন্দর, বাউতলা, বীরচন্দ্রপুর, কালিকাপুর, বঙ্গেরচর, সাহেবনগর সহ অন্তত ৩৫টির বেশি গ্রামে পানি ঢুকে পড়ে। ভেঙে যায় গাজীরবাজার এলাকার অস্থায়ী সেতু। বন্ধ হয়ে পড়ে বন্দরের বাণিজ্য ও যাত্রী পারাপার। এর আগে মঙ্গলবার খলাপাড়া এলাকায় হাওড়া নদীর বাঁধের কিছু অংশ ভেঙ্গে পানি ঢুকতে শুরু করে।

জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মনজুরুল আলম জানান, হাওড়া নদী ও জাজীর খালসহ বিভিন্নস্থানে পানি বিপদ সীমার কাছাকাছি রয়েছে। তা অতিক্রম করলে আরো নতুন করে এলাকা প্লাবিত হতে পারে।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক সুশান্ত সাহা জানান, পাহাড়ি ঢলে ১৯৫ হেক্টর শাক সবজির জমি, ১২২ হেক্টর আমনের বীজতলা, ৩ হাজার ৪৪০ হেক্টর রোপা আমন ধানের জমি পানির নিচে তলিয়ে আছে। পানি সরে গেলে ক্ষয়ক্ষতির সম্ভাবনা কম। তবে পানি দীর্ঘস্থায়ী হলে ক্ষয়ক্ষতি বাড়তে পারে। এক সপ্তাহ পর ক্ষয়ক্ষতির চূড়ান্ত প্রতিবেদন তৈরি করা হবে।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা প্রশাসক মো. হাবিবুর রহমান বলেন, ভারতের ত্রিপুরা থেকে নেমে আসা পানি ও বৃষ্টির পানির কারণে আখাউড়া উপজেলার ১টি পৌরসভাসহ ৫টি ইউনিয়ন এবং কসবা উপজেলার ১টি ইউনিয়নে বন্যা দেখা দিয়েছে। দুই উপজেলায় প্রায় ১২শ পরিবার আক্রান্ত হয়েছে। দুর্গতদের জন্য ১৫ মেট্টিক টন চাল ও ৫ লক্ষ টাকা বরাদ্ধ করেছি। ইতিমধ্যে ত্রাণ বিতরণ শুরু হয়েছে। বন্যা পরিস্থিতি আমাদের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। আমরা দুর্গতদের পাশে রয়েছি।

Must Read