দেশের অধিকাংশ জেলায় এখন বিরাজ করছে বন্যা। গত কয়েক দিনের টানা বৃষ্টিতে এ পরিস্থিতি আরো ভয়ঙ্কর রূপ ধারণ করেছে। প্রতিদিনই বাঁধ ভেঙ্গে নতুন নতুন গ্রাম বানের পানিতে তলিয়ে যাচ্ছে। প্রায় প্রতিটি নদীর পানিই বিপদ সীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ডুবে যাচ্ছে ঘর-বাড়ি ও আবাদি জমি। ভেসে যাচ্ছে পুকুরের মাছ আর গবাদি পশু। না খেয়ে আর আশ্রয়ের অভাবে যেখানে দিন কাটছে বানভাসি মানুষদের, সেখানে কিছু ভিন্ন রূপও দেখা যায়। বন্যার পানি থেকে বাঁচাতে পরম মমতায় প্রিয় পশুটিকে পিঠে তুলে নেয়ার এমন দৃশ্যই বুঝি মানবিকতা।






আরো পড়ুন: বন্যায় তলিয়েছে টাঙ্গাইলের আরও ২০ গ্রাম
টাঙ্গাইলে বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি হয়েছে। যমুনা নদীর পানি বেড়ে বিপদসীমার ৯১ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে বইছে। ভূঞাপুর উপজেলার দুটি বাঁধ ভেঙে নতুন করে আরও ২০ টি গ্রাম তলিয়ে গেছে। রাস্তাঘাট, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও ফসলি জমিও পানির নিচে। এ অবস্থায় কোনো ধরণের ত্রাণ না পাওয়ার অভিযোগ বানভাসি মানুষের। যমুনায় অব্যাহত পানি বৃদ্ধিতে প্রতিদিনই নতুন নতুন গ্রাম প্লাবিত হয়ে পানিবন্দি হয়ে পরছে ভূঞাপুর উপজেলার মানুষ।






বুধবার রাতে তারাই এলাকায় আকস্মিক বাঁধ ভেঙে প্রায় ১০টি এলাকা প্লাবিত হয়। নিমিষেই শত শত ঘর বাড়ি তলিয়ে চরম বিপদে পরে স্থানীয় লোকজন। কেউ কেউ আত্মীয় স্বজনের বাড়ি আশ্রয় নিলেও বেশিরভাগ মানুষ খোলা আকাশের নিচে রাস্তায় আশ্রয় নিয়েছে। এদিকে দুপুরের দিকে টেপিবাড়ি এলাকার আরও একটি বাঁধ ভেঙে যায়। নিমিষেই টেপি বাড়ি উচ্চ বিদ্যালয়ের দুইটি টিনের ঘর স্রোতের তোড়ে ভেসে যায়।






তলিয়ে যায় বিস্তীর্ণ এলাকার ঘর বাড়ি ও ফসলি জমি। হুমকির মুখে পরেছে ভূঞাপুর তারাকান্দি সড়কটি। কোনো প্রকার সাহায্য সহযোগিতা পায়নি বলে অভিযোগ বানভাসি মানুষদের। দ্রুত প্রয়োজনীয় সাহায্য সহযোগিতার দাবী স্থানীয়দের। স্থানীয় একজন বলেন বলেন, যে বাঁধটা বার বার ভাঙছে সেটা যদি বেড়িবাঁধ করে দেয় সব থেকে বড় উপকার হবে। এদিকে বানভাসিরা ত্রাণ সামগ্রী না পাওয়ার অস্বীকার করে ইতোমধ্যেই উপজেলায় ২২শ মেট্রিকটন চাল ও শুকনো খাবার বিতরণ করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার।






উপজেলা নির্বাহী অফিসার ঝোটন চন্দ বলেন, উপজেলায় ২২০০ মেট্রিক টন চাল ও শুকনো খাবার বিতরণ করা হয়েছে। এছাড়া ৪টি ইউনিয়নে আমরা চাল ও শুকনো খাবার দেয়া শুরু করেছি। স্থানীয় সংসদ সদস্য জানিয়েছেন, গত ৩০ বছরে এমন বন্যা হয়নি। সকল নেতাকর্মী নিয়ে বানভাসি মানুষের পাশে থাকার আশ্বাসও দিয়েছেন তিনি। সেই সঙ্গে যমুনায় স্থায়ী বাঁধের জন্য প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করছেন তিনি।






টাঙ্গাইল-২ আসনের সংসদ সদস্য তানভীর হাসান ছোট মনি বলেন, বন্যা দুর্গতদের সহায়তা করতে সবাই কাজ করছে। অবশ্যই কয়েকদিনের মধ্যে তাদের পুনর্বাসনের একটি ব্যবস্থা করব। টাঙ্গাইলের ভূঞাপুর উপজেলার ৬টি ইউনিয়নের ৪টি ইউনিয়ন তলিয়ে প্রায় দেড় লক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দি হয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছে।-সময় নিউজ।